[ad_1]
বাংলাদেশে অধিকাংশ পরিবার আয়ের বড় অংশ ব্যয় করছে শুধু খাবারের পেছনে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, দেশের ৬২ শতাংশ পরিবার তাদের মোট আয়ের অন্তত অর্ধেক খাবার কিনতেই খরচ করছে।
গবেষণায় দেখা যায়, প্রতি দশটি পরিবারের একটি খাবারের জন্য আয়ের তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি ব্যয় করে। এ তথ্য তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিবারের আর্থিক টানাপোড়েন এতটাই তীব্র যে তাদের বাজেটে অন্যান্য প্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় করার সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ছে।
২০২৩ সালের জুন মাসে তথ্য সংগ্রহ করা হয় এবং ডিসেম্বরে তা প্রকাশ করা হয়। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)-র সহযোগিতায় বিবিএস এই বিশ্লেষণ সম্পন্ন করেছে। সম্প্রতি খাদ্য নিরাপত্তা ও মোকাবিলা কৌশল নিয়ে আয়োজিত এক সভায় ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব আলেয়া আখতার এবং সভাপতিত্ব করেন বিবিএস মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
তথ্য অনুযায়ী, গ্রামীণ এলাকায় ৩১ দশমিক ৬ শতাংশ পরিবার আয়ের ৬৫ শতাংশ বা তার বেশি খাবারে খরচ করে। শহরে এই হার ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ। সিটি করপোরেশন এলাকায় তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থা—মাত্র ৬ দশমিক ৫ শতাংশ পরিবার অতিরিক্ত খাদ্য ব্যয়ের মুখে পড়ে।
চট্টগ্রাম, ঢাকা ও খুলনা বিভাগে ৪০-৪৬ শতাংশ পরিবার আয়ের অর্ধেকের কম খাবারে খরচ করছে। বিপরীতে সিলেট, রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহে ২৫-৩৫ শতাংশ পরিবার বাজেটের ৭৫ শতাংশেরও বেশি খাবারে ব্যয় করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ও সানেমের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, “কোভিড-পরবর্তী সময়ের তুলনায় পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়নি। বরং নতুন ঝুঁকি তৈরি হয়েছে—উচ্চ মূল্যস্ফীতি স্থায়ী হয়ে গেছে, ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। ফলে প্রোটিন ও পুষ্টির গ্রহণ কমে যাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা বহু বছর ধরে এসব বিষয়ে সতর্ক করছি, কিন্তু বাস্তব চিত্র এখনও উদ্বেগজনক।”
বিবিএস মহাপরিচালক মিজানুর রহমান জানান, এটি প্রচলিত অর্থে কোনো জরিপ নয়, বরং গবেষণাভিত্তিক প্রতিবেদন। ২০২৩ সালের খাদ্য সংক্রান্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এবং ডব্লিউএফপির সহায়তায় এটি সম্পন্ন হয়েছে।
গবেষণার ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা মেহেনা তাবাসসুম বলেন, “বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তার বর্তমান অবস্থা এবং জাতীয় ও বিভাগীয় পর্যায়ে খাদ্য অনিরাপত্তার মাত্রা ও তীব্রতা নিরূপণের লক্ষ্যেই এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়েছে।”
[ad_2]
https://slotbet.online/