শিরোনাম
স্ট্রোক প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে হবে: মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন Save the nature of Bangladesh চট্টগ্রাম মহানগর শাখার কমিটির পক্ষ থেকে মেয়র কে ফুলেল শুভেচ্ছা বিশ্ব অ্যানাস্থেসিয়া দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে ডা. শাহাদাত হোসেন চট্টগ্রামে সেভ দ্যা নেচার অব বাংলাদেশের পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত। মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণে যৌথ উদ্যোগই পারে সুস্থ জাতি গঠনে অবদান রাখতে: মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন সব ধর্মের মানুষের জন্য শান্তির শহর গড়তে চাই — মেয়র ডা. শাহাদাত ভেজাল বিরোধী অভিযান সদরঘাট রোডে দুই রেস্টুরেন্টকে ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা টাইফয়েড থেকে শিশুদের বাঁচাতে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন নিন: মেয়র ডা. শাহাদাত চন্দনাইশে শহীদ জিয়ার খাল খননের স্মৃতি বিজড়িত বৈঠকখানার উদ্বোধনকালে ডা. শাহাদাত হোসেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে এগিয়ে নিতে হবে –জসিম উদ্দিন চৌধুরী

স্ট্রোক প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে হবে: মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন

Reporter Name / ৮ Time View
Update : সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে বিশ্ব স্ট্রোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে বক্তব্য রাখছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, স্ট্রোক এখন বিশ্বের অন্যতম প্রাণঘাতী রোগ। প্রতি চারজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজন জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে স্ট্রোকের ঝুঁকিতে থাকেন। অথচ এর বেশিরভাগ ঝুঁকি আমাদের নিয়ন্ত্রণাধীন। সচেতন হয়ে চিকিৎসা নিলে স্ট্রোক থেকে বাঁচা সম্ভব।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিশ্ব স্ট্রোক দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে তিনি একথা বলেন। স্ট্রোক প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও দ্রুত চিকিৎসার গুরুত্ব তুলে ধরতেবিশ্ব স্ট্রোক দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) নিউরোসার্জারি বিভাগ আয়োজন করেছে দুই দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি।

সাইকেল র‍্যালির মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী এই উদযাপনের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। সকাল ৯টায় চমেক ক্যাম্পাস থেকে শুরু হওয়া সাইকেল র‍্যালিটি হাসপাতালের মূল মাঠে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে অনুষ্ঠিত হয় সাইকেল ফেস্ট, ক্রিকেট ও ফুটবল টুর্নামেন্টসহ বিভিন্ন ক্রীড়া আয়োজন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. সাইফুল আলম এবং সঞ্চালনা করেন সহকারী অধ্যাপক ও উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ডা. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন।

মেয়র প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, আজ বিশ্ব স্ট্রোক দিবস। অনেকে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোককে এক মনে করেন—এটা ভুল ধারণা। হার্ট অ্যাটাক হয় হৃদপিণ্ডে, আর স্ট্রোক হয় মস্তিষ্কে। হঠাৎ মুখ বাঁকা হয়ে যাওয়া, হাত-পা অবশ হয়ে যাওয়া বা কথা জড়ানো—এসবই স্ট্রোকের প্রাথমিক লক্ষণ। এমন অবস্থায় সময় নষ্ট না করে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়াই জীবনের জন্য সবচেয়ে জরুরি।”

মেয়র বলেন, নিয়মিত ব্যায়াম, লবণ ও তেল-চর্বিজাত খাবার সীমিত করা, ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার, রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার মাধ্যমে স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব। প্রতিরোধই চিকিৎসার আগে সবচেয়ে কার্যকর ব্যবস্থা।

তিনি আরও বলেন, আজকের এই দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়—স্ট্রোক সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানো এখন সময়ের দাবি। প্রতিটি মানুষেরই স্ট্রোকের প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে জানা জরুরি। সময়মতো চিকিৎসা না পেলে মস্তিষ্কের কোষ নষ্ট হয়ে স্থায়ী পক্ষাঘাত বা মৃত্যুও ঘটতে পারে। তাই ‘গোল্ডেন আওয়ার’ বা প্রথম কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই চিকিৎসা নিলে অনেক জীবন বাঁচানো সম্ভব।

ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নাগরিক স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন ও প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্ব দিচ্ছে। নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে জনগণকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পরামর্শ গ্রহণে উৎসাহিত করা হচ্ছে। তিনি স্ট্রোক প্রতিরোধে গণসচেতনতা বাড়াতে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীদের একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তাসলিম উদ্দিন, উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আব্দুর রব। উপস্থিত ছিলেন নিউরোসার্জারি বিভাগের ইউনিট প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. সানাউল্লাহ শামীম, সহযোগী অধ‍্যপাক ডা. মাহফুজুল কাদের, সহকারী অধ্যাপক ডাঃ ওমর ফারুক,উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও সহকারী অধ্যাপক ডা. সিরাজুল মুনির অহি, সহকারী অধ‍্যাপক ডা. মইনুদ্দীন জাহেদ, সহকারী অধ্যাপক ডা. কামাল হোসেন, ডাঃ মাজেদ সুলতান,ডা সমীর, আবাসিক সার্জন ডাঃ ইমরান হোসেন,ডাঃ আলাউদ্দিন,ডা. নারায়ন ধর, ডাঃ মির্জা,ডাঃ শিহাব,ডাঃ শামীমা,ডাঃখুরশীদ,ডা. আয়াতুল আমিন, ডা জয়দীপ ,ডাঃ সৌমেন,ডা. রাখাল, ডা. আশিক,, ডাঃ মুনীর,ডাঃ নূর, ডাঃ সজীব, ডাঃ জিসান,ডা. দেবব্রত, ডা. হিমা, ডা. ইরফান প্রমুখ।

অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. জসিম উদ্দিন বলেন, “বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৩ লাখ মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হন, যার অর্ধেকেরও বেশি সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়ায় মৃত্যুবরণ করেন বা স্থায়ী অক্ষমতায় ভোগেন। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ধূমপান ও স্থূলতা এখনো প্রধান ঝুঁকির কারণ।”
তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এখন স্ট্রোক চিকিৎসার জন্য ২৪ ঘণ্টার জরুরি সেবা চালু করেছে। আমরা চাই, মানুষ দ্রুত শনাক্ত করে চিকিৎসা নিক—এটাই এই দিবসের মূল বার্তা।”

নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. মো. সাইফুল আলম বলেন, “স্ট্রোকের ৮০ শতাংশই প্রতিরোধযোগ্য। নিয়মিত রক্তচাপ ও রক্তে শর্করা পরীক্ষা করা, ধূমপান বন্ধ করা, লবণ ও তেল কম খাওয়া, এবং দৈনিক অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস গড়ে তোলা—এই ছোট পরিবর্তনগুলোই জীবন বাঁচাতে পারে।”
ডা. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, “স্ট্রোক প্রতিরোধ মানেই জীবন বাঁচানো। আজকের কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হলো—সাধারণ মানুষকে বোঝানো যে স্ট্রোক হঠাৎ ঘটে, কিন্তু এর ঝুঁকি প্রতিদিন তৈরি হয়। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ধূমপান বা অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন—এসবের প্রতি সচেতন না থাকলে যেকোনো মুহূর্তে স্ট্রোক হতে পারে। নিউরোসার্জারি বিভাগ শুধু চিকিৎসা নয়, প্রতিরোধমূলক কাজেও ভূমিকা রাখতে চায়।

প্রোগ্রামের ২য় দিনের কার্যক্রম বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮ টায় কলেজ অডিটোরিয়ামে, আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে অধ‍্যক্ষ অধ্যাপক জসিম উদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এর নিউরো সার্জারী বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ ধীমান চোধুরী, সহযোগী অধ্যাপক ডাঃসামসুল আলম সবুজ উপস্থিত থাকবেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/