প্রতিদিন জাতীয় দৈনিকে অসংখ্য খবর প্রকাশিত হয়। সেইসব খবর থেকে আলোচিত কিছু খবরের সংকলন করা হলো।
পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়ক ও চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল—এই তিন অবকাঠামো নতুন; কিন্তু এগুলোর মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায়ে বিপুল ব্যয় ধরে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। আর ঠিকাদার কাজ পেয়েছে কোনো প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র ছাড়া।
এর পাশাপাশি অন্যান্য খবরগুলো দেখে আসি—
প্রথম আলো
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দরপত্র ছাড়া নিজেদের পছন্দে ঠিকাদার নিয়োগে লাভবান হয়েছে কাজ পাওয়া প্রতিষ্ঠান। সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তৎকালীন মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। লোকসান হয়েছে দেশের মানুষের। তাঁদের এখন ঋণের বোঝা টানতে হচ্ছে, অন্যদিকে চলাচলে খরচ পড়ছে বেশি। অবকাঠামোগুলো থেকে যে আয় হচ্ছে, তার বড় অংশ নিয়ে যাচ্ছে ঠিকাদার।
কালবেলা
বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ১৮তম ব্যাচের কর্মকর্তা শামীমা ইয়াসমিন। নিয়মিত পদোন্নতিতে ওই ব্যাচের প্রায় সবাই এখন অতিরিক্ত ডিআইজি বা ডিআইজি পদে রয়েছেন। তবে শামীমা ইয়াসমিন রয়েছেন পুলিশ সুপার (এসপি) পদেই। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির কেমিক্যাল ল্যাবের বিশেষ সুপার তিনি। অনেক বছর এই পদে থাকলেও বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন। রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী থেকে শুরু করে অভিজাত গুলশান পর্যন্ত অন্তত ১০টি ফ্ল্যাট কিনেছেন নামে-বেনামে। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ জাদুঘর এলাকায় ৫২ বিঘা জমি আর গুলশানে কিনেছেন প্লট। রয়েছে একাধিক গাড়ি। কালবেলার অনুসন্ধান আর সংশ্লিষ্ট সূত্রে মিলেছে এসব তথ্য।
সিদ্ধেশ্বরীর কনকর্ড ম্যাগনোলিয়া অ্যাপার্টমেন্টে শামীমা যে ফ্ল্যাটে বসবাস করেন, সেখানে পুলিশের প্রভাব দেখিয়ে অন্যের ফ্ল্যাটের জায়গা, পার্কিং স্পেস আর অ্যাপার্টমেন্টের কমন স্পেস দখলে নিয়েছেন। রাজউকের নকশা অমান্য করে চালাচ্ছেন সংস্কারকাজ। এসপি পরিচয়ে গত সাত বছরে সেখানে দেননি কোনো সার্ভিস চার্জ। এতে বকেয়া পড়েছে ১৭ লাখ টাকা। এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করে ফ্ল্যাটের প্রতিবেশীরা হেনস্তার শিকার হয়েছেন তার হাতে। ফ্ল্যাট মালিক সমিতি প্রতিবাদ করলে তাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকিও দেন তিনি। উপায় না পেয়ে তার বিরুদ্ধে সিআইডির প্রধান, রাজউক ও রমনা থানায় অভিযোগ দিয়েছে ম্যাগনোলিয়া অ্যাপার্টমেন্ট মালিক সমিতি।
টিবিএস
ট্রান্সফার প্রাইসিং বিধিমালা করার এক দশকেরও বেশি সময় অতিবাহিত হওয়ার পরে— এর প্রতিপালন নিশ্চিত করতে, প্রথমবারের মতো বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর (এমএনসি) নিরীক্ষা শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এসব প্রতিষ্ঠান তাদের আন্তর্জাতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে করফাঁকি দেওয়ার কোনো কৌশল অবলম্বন করেছে কিনা– তা শনাক্ত করতেই করা হবে এ অডিট।
রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেছেন, আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিতে এটি একটি বড় পদক্ষেপ। যেসব দেশে মুনাফা স্থানান্তর করলে কম কর দিতে হয়, অনেক সময় বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান সেখানে তা স্থানান্তর করে। এতে সেখান থেকে বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব আয় কমে যায়। আর এ ধরনের মুনাফা স্থানান্তর রোধ করাই অডিটের লক্ষ্য।
কালবেলা
বহুতল ভবনটির মালিকানার কোনো কাগজপত্র নেই। নেই ভবন নির্মাণে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অনুমোদন। অথচ ছয়তলার ভবনটি ঠায় দাঁড়িয়ে আছে নগরের বুক চিরে। সেখান থেকে নিয়মিত ভাড়া তুলে আসছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিম চৌধুরীর পরিবার। প্রায় ১৮ বছর ধরে পরিবারটি এভাবেই নগরের প্রাণকেন্দ্রখ্যাত চকবাজারের চট্টেশ্বরী রোডের হামদর্দ বিল্ডিং নামে পরিচিত ‘হারুনুর রশীদ চৌধুরী ভিলা’ দখলে রেখেছে। তবে ভবনের মালিক কে জানে না কেউ।
স্থানীয়দের কাছে রহস্যময় বলে পরিচিত ছয়তলা ভবনে বাস করছে ১২ থেকে ১৫টি পরিবার, আছে অনেক দোকানপাটও। অনেকের প্রশ্ন, অবৈধ ভবনটি আসলে কার? এ ব্যাপারে সিডিএ নির্লিপ্ত কেন?
মানবজমিন
রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষে কারখানা বন্ধসহ নানা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও অনিশ্চয়তার মধ্যেও রপ্তানি আয়ের ইতিবাচক ধারা ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। গত অক্টোবর মাসে তৈরি পোশাকের রপ্তানি আয় বেড়েছে প্রায় ২৩ শতাংশ। গত আগস্ট মাসের শেষে শুরু হওয়া শ্রমিক অসন্তোষের কারণে পোশাক রপ্তানি নিয়ে বড় শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, যা এখনো চলমান।
তবে প্রতিকূলতার মধ্যেও দেশের রপ্তানি আয়ে বড় সুখবর এসেছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যমতে, অক্টোবর মাসে এ খাত ৩৩০ কোটি ডলার মূল্যের রপ্তানি করেছে, আগের অর্থবছরের একই মাসের রপ্তানি আয় ছিল ২৬৮ কোটি ডলারের। এক বছরের ব্যবধানে এ খাতের রপ্তানি আয় বেড়েছে ২২.৮ শতাংশ।
বণিক বার্তা
চলতি ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী ডেঙ্গুর সংক্রমণ শনাক্তের সংখ্যা ১ কোটি ৩০ লাখ ছাড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোলের (ইসিডিসি) তথ্য অনুযায়ী, এর সিংহভাগ সংক্রমণই ঘটেছে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার কয়েকটি দেশে। সর্বোচ্চসংখ্যক সংক্রমণ দেখা গেছে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, পেরু, কলম্বিয়া ও প্যারাগুয়েতে। শুধু ব্রাজিলেই এ পর্যন্ত সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ৯৫ লাখের বেশি। আর্জেন্টিনা, পেরু, কলম্বিয়া ও প্যারাগুয়েতে সংক্রমণ সংখ্যা দুই থেকে ছয় লাখের মধ্যে।
এসব দেশে সংক্রমণ শনাক্ত বেশি হলেও মৃত্যুর সংখ্যার দিক থেকে এরই মধ্যে তালিকার ওপরের দিকে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ডেঙ্গুর সংক্রমণ শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৭৪ হাজার ৮০০। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩৬৭ জনের। সে অনুযায়ী, চলতি বছরের ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যায় ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার পরের অবস্থানেই রয়েছে বাংলাদেশ।
মানবজমিন
সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও তার স্ত্রী মোনালিসা গত ১০ বছরে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন তার ছোট ভাই সরফরাজ হোসেন মৃদুল। সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি অডিও ক্লিপে এ তথ্য দিয়েছেন তিনি। অনলাইন ক্যাসিনো সম্রাজ্ঞী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন মন্ত্রীপত্নী মোনালিসা হোসেনকে।
মন্ত্রী দম্পতি গত ১০ বছরে মেহেরপুরের অনলাইন ক্যাসিনো থেকে শুরু করে এমন কোনো খাত নেই যেখানে দুর্নীতি করেননি। আর এ সকল কর্মকাণ্ড করে হয়েছেন বিপুল সম্পদের মালিক। কানাডায় বাড়ি কিনেছেন বলে এতদিন ধরে যে খবর রটেছিল সেই খবরের সত্যতা স্বীকার করলেন তারই ছোট ভাই মেহেরপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সরফরাজ হোসেন মৃদুল। শুধু কানাডায়ই না, বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি কিনেছেন বলে স্বীকার করেছেন। তবে অডিও ক্লিপে অপর প্রান্তে কে কথা বলছেন তা জানা যায়নি।
যুগান্তর
বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহে বড় ধরনের ছন্দপতন দেখা দিয়েছে। গত চার বছরের মধ্যে এ খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর-তিন মাসে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে দশমিক ৬৭ শতাংশ।
এর চার বছর আগে অর্থাৎ ২০১৯-২০ অর্থবছরে একই সময়ে এই খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছিল দশমিক ৬৪ শতাংশ। এরপর ২০২০-২১ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রতি জুলাই-সেপ্টেম্বরে সোয়া ১ শতাংশ থেকে ২ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। গত চার বছরের তুলনায় বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির হার কমার জন্য সাম্প্রতিক সময়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলন, রাজনৈতিক অস্থিরতা, পরপর তিন দফা বন্যা এবং উদ্যোক্তাদের আস্থাহীনতাকে দায়ী করা হচ্ছে।
কালের কণ্ঠ
‘সেনা কর্মকর্তাদের একটি তালিকা করা হয়েছিল। ২০০৯ সালে পিলখানায় সহকর্মী সেনা কর্মকর্তাদের পরিকল্পিত ও নৃশংসভাবে হত্যার কয়েক দিন পর ওই বছরের ১ মার্চ ঢাকা সেনানিবাসে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমরা যাঁরা কিছু প্রশ্ন করেছিলাম, বিচার চেয়েছিলাম, তাঁদের তালিকা। এই তালিকার প্রথম শিকার আমরা ছয়জন। সহকর্মীদের হত্যার বিষয়ে প্রশ্ন তুলে বিচার চাওয়ার অপরাধে কোনো তদন্ত এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে আমাদের বরখাস্ত করা হয়।
পরে বরখাস্তের আদেশ বাতিল করে পাঁচজনকে অকালীন অবসর দেওয়া হয়। তালিকার অন্যদেরও অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়। তরুণ পাঁচ সেনা কর্মকর্তাকে প্রায় এক বছর আটকে রেখে নির্যাতন এবং পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। নষ্ট করে দেওয়া হয় তাঁদের ক্যারিয়ার।
সমকাল
হাসিনা সরকারের পতনের পর যে গাড্ডায় পড়েছে, সেখান থেকে এখনও সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি পুলিশ। নানা সংকট, সীমাবদ্ধতা আর বিপর্যয় কাটিয়ে নতুন রূপে ফেরার চেষ্টায় আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীটি। একদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে দ্রুত বাহিনীর গতি ফেরানো, অন্যদিকে জনআস্থা অর্জন। এ দুই চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে চলছে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার।
এই পটভূমিতে স্বচ্ছ ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করার দৃঢ়তা পুলিশের জন্য জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে, নতুন পরিস্থিতিতে বাঁকবদলের ভেতর দিয়েই যাচ্ছে পুলিশ। ৫ আগস্টের পর প্রতিদিন পুলিশের বিভিন্ন পদে আসছে নতুন মুখ। গত তিন মাসে বদলি ও পদায়ন পেয়েছে ঝড়ের গতি! এ সময়ে সারাদেশে পোশাকধারী দুই লাখ দুই হাজার পুলিশের বিপরীতে রদবদল করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৪২ সদস্যকে। সে হিসাবে প্রায় ২৫ শতাংশ পুলিশের চেয়ার বদলে গেছে। অল্প সময়ে এত সংখ্যক পুলিশ সদস্যের কর্মস্থল বদলের ঘটনা নজিরবিহীন।
এছাড়া ফেসবুকে হাসনাত বিপ্লবীদের ফাঁসির দড়ি এগিয়ে আসছে; চীনবিরোধী ওয়াল্টজকে কেন বেছে নিলেন ট্রাম্প; সন্ত্রাসবিরোধী মামলায় খালাস তারেকের সাবেক পিএস অপু; শেরেবাংলা, সোহরাওয়ার্দী ভাসানীকেও জাতির পিতা করার পরামর্শ; ‘বি-কোম্পানি’র মামা বাড়ির আবদার; সম্পাদক পরিষদ অ্যাক্রিডিটেশন বাতিল সংবাদ মাধ্যমের জন্য হুমকি—সংবাদগুলো বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।