নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের বরলা গ্রামবাসীর চলাচলের একমাত্র কাঁচা সড়কটি সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সংস্কারে নামে যেনতেন ভাবে মাটি ভরাট করা হয়েছে। গ্রামবাসীর আশঙ্কা ঠিকঠাক সংস্কার না হলে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ সড়কটি তাদের দুর্ভোগের কারন হবে।
জানা যায়, বরলা খালপাড়ের রাস্তাটির দৈর্ঘ্য দুঃশ্বিমপাড়া পাকা রাস্তার থেকে মমিনা খাতুন কারিগরি মাদ্রাসা হয়ে রেল লাইন সংলগ্ন সাহেব দাদার পোল পর্যন্ত। প্রায় দেড় কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে খানাখন্দে পরিনত হয়। সেই রাস্তা সংস্কার করতে সোনাইমুড়ী পৌরসভা গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় ৩ লাখ টাকার বরাদ্দ দেয়। রাস্তা সংস্কারের পরিবর্তে নামে মাত্র মাটি ফেলে কাজ শেষ করে ঠিকাদার ফজলুল হক।
সরেজমিনে দেখা যায়, পৌরসভার বরলা-চন্দ্রপুর সীমানার দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদরাসার সামনে থেকে প্রায় ২০ ফুট রাস্তায় এবড়োখেবড়ো ভাবে বড় বড় মাটির টিলা ছড়িয়ে রয়েছে। এর পরে সামনের দেড়শো ফুট রাস্তায় কোন মাটি ফেলা হয়নি। রাস্তার ভেতরে ছোট ছোট গর্তে অল্প কিছু মাটি ফেলে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। বরলা কাঁচা সড়কের পুরোটাতেই একই অবস্থা। শুধু মমিনা খাতুন কারিগরি মাদ্রাসার সামনের রাস্তার অংশটুকু মোটামুটি সংস্কার হয়েছে। এছাড়া পুরোটা রাস্তায় সংস্কারের নামে কোনরকমে মাটি ফেলে কাজ শেষ করা হয়েছে।
কাজের অনিয়ম নিয়ে বরলা উত্তর পাড়ার উকিল বাড়ির বাসিন্দা সাইদুজ্জামান ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, রাস্তা সংস্কারের কাজে অনিময় হচ্ছে। বরাদ্দের ২০ শতাংশ কাজও হয়নি। কোনরকমে মাটি ফেলে সংস্কার কাজ শেষ করা হয়েছে। অনেক জায়গায় মাটির চিন্হ নেই। রাস্তার কাজ যারা করেছেন তাদের কয়েকবার ঠিক করে সংষ্কার করার কথা বললেও তারা বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি। কার কাছে অভিযোগ দিবো? বন্যার এতদিন পরে রাস্তা সংস্কার করার কাজ আসলো আর সেটা যেনতেন ভাবে করা হচ্ছে। কথা বললেও ঠিকাদারের লোকজন শোনেনা।
আরেক বাসিন্দা মোঃ দুলাল জানান, ১৯৯৩ সালে এই রাস্তা গ্রামের মানুষের দেওয়া জমির ওপরে নির্মিত হয়েছে। বন্যার পরে এই প্রথম রাস্তা সংস্কারের কাজ হয়েছে। রাস্তা সংস্কারের জন্য মাটিও দিয়েছে গ্রামের মানুষ কিন্তু তার পরেও রাস্তার কাজ ঠিক ভাবে করেনি ঠিকাদার। এই রাস্তার কাজ দেখতে দুইবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসেছেন। রাস্তার কাজ ঠিক ভাবে করার জন্য ঠিকাদারকে বলে গিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চলে যাওয়ার পরে রাস্তায় আর একটুও মাটি পড়েনি। ঠিকাদার নিজের ইচ্ছামত কাজ করেছে। গ্রামবাসী প্রতিবাদ করলে বলেছেন পরে আবার মাটি ফেলা হবে।
এসকল অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় ঠিকাদার ফজলুল হকের সাথে। তিনি বলেন, গ্রামবাসী না জেনেই অভিযোগ করছে। তাদেরকে জানতে হবে বিষয়টা। কাজটা হচ্ছে রাস্তা সংস্কার। যেখানে যেখানে দরকার সেখানে সেখানে মাটি দেওয়ার জন্য। পুরো রাস্তায় মাটি ফেলার দরকার নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার রাস্তা পরিদর্শন ও নির্দেশের বিষয়ে তিনি বলেন, ইউএনও যেভাবে বলেছেন সেভাবেই রাস্তার কাজ করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে সোনাইমুড়ী পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আকতারের সাথে কয়েকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কল রিসিভ হয়নি।
https://slotbet.online/