বিক্ষোভে উত্তাল সচিবালয় – Bangla Affairs

Reporter Name / ৪১ Time View
Update : সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫


সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ সচিবালয়। সোমবার (২৬ মে) সকাল থেকে বাদামতলা প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন সচিবালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কর্মীরা স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ রেখে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তারা সংশোধিত অধ্যাদেশকে ‘অবৈধ কালাকানুন’ আখ্যায়িত করে অবিলম্বে এটি বাতিলের দাবি জানান।

এর আগে গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয় আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের শর্তে। তবে খসড়াটি পর্যালোচনার জন্য চারজন উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁরা হলেন: আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান এবং গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

কর্মচারীদের দাবি, সংশোধিত অধ্যাদেশটি সংবিধান পরিপন্থী এবং এটি বিদ্যমান চাকরি নিরাপত্তার পরিপন্থী। তারা অভিযোগ করেন, বর্তমানে কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে একাধিক ধাপ ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়, যা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে। কিন্তু নতুন অধ্যাদেশে স্বল্প সময়ের নোটিশে চাকরি থেকে অব্যাহতির বিধান রাখা হয়েছে, যা কর্মকর্তাদের নিরাপত্তাহীনতায় ফেলবে।

বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবীর বলেন, “এই কালাকানুন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। এটা শুধুই একজন কর্মচারীর বিষয় নয়, এটা পুরো প্রশাসনের অস্তিত্বের প্রশ্ন।”

তবে দুপুরে পরিষদের প্রতিনিধিরা উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের সঙ্গে বৈঠকে বসেন এবং বৈঠক শেষে সাময়িকভাবে কর্মসূচি স্থগিত করার ঘোষণা দেন।

অন্যদিকে, আন্তঃমন্ত্রণালয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সমন্বয়ক মো. নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, আজ সোমবার (২৬ মে) বেলা ১১টায় তারা বৈঠকে বসে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করবেন।

প্রশাসন বিশ্লেষক ও সাবেক সচিব এ কে এম আব্দুল আউয়াল মজুমদার এ প্রসঙ্গে বলেন, “প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফেরাতে কিছুটা কঠোরতা আনা প্রয়োজন। যেসব কর্মচারী দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে আচরণ করছেন, তাদের জন্য এই বিধান জরুরি। যারা সৎ, দায়িত্বশীল, তাদের এই আইনের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।”

তিনি আরও বলেন, “১৯৮০-এর দশকে জিয়াউর রহমান প্রশাসনে অধ্যাদেশ প্রবর্তনের মাধ্যমে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছিলেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটেও সরকার যদি সুসংহত প্রশাসন গড়তে চায়, তবে চাকরি আইনে পরিবর্তন অনিবার্য।”

সরকারি চাকরি সংশোধন নিয়ে চলমান এই টানাপড়েনে প্রশাসনিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় সংলাপ এবং সমঝোতার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট মহল।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/