জামালপুর পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়কে জ্বলছে না সড়কবাতি। সড়কে ল্যাম্পপোস্ট দাঁড়িয়ে থাকলেও বাতি নষ্ট থাকায় কোন কাজে আসছেনা তা। বর্তমানে সড়কগুলোতে যে পরিমাণ সড়কবাতি জ্বলছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত। সড়কবাতির সাথে পাল্লা দিয়ে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো। সড়ক বাতি ও সিসিটিভি’র অভাবে দিনে ও রাতে অনেকটাই অনিরাপদ ভাবে চলাচল করছে জামালপুর পৌরবাসী।
সরেজমিনে দেখা যায়, খাতা কলমে প্রথম শ্রেণীতে জায়গা করে নিয়েছে জামালপুর পৌরসভা। ৫৩.২৮ বর্গ কিলোমিটারের এই পৌরসভায় ওয়ার্ড রয়েছে ১২টি। এই ১২ টি ওয়ার্ডের মধ্যে বিভিন্ন পাড়া মল্লায় কোথাও সড়ক বাতি রয়েছে আবার কোথাও বাতির চিহ্নটি পর্যন্ত নেই। পৌর এলাকাকে নিরাপদ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ২০২১-২২ অর্থ বছরে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে পৌরকর্তৃপক্ষ ১২৬ টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করলেও বর্তমানে ৯৫ শতাংশ সিসি ক্যামেরা অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সড়কবাতি ও সিসিটিভি ক্যামেরার অভাবে প্রতিনিয়ত অপরাধের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অভিযোগ পৌরবাসীর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পৌরবাসী জানান, সড়ক বাতি না থাকায় এই শহরের রাত অনেকটা ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। ডিজিটাল যুগে এসে ভূতের ভয় কাটিয়ে উঠতে পারলেও বড় ভয় এখন ছিনতাইকারীদের দেখে। রাস্তা অন্ধকারাচ্ছন্ন হওয়ায় ছোট খাটো অনেক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। আর সিসিটিভি ক্যামেরার অভাবে সে সব ছিনতাইকারীদের শনাক্ত
করতে হিমশিম খাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তারা আরও জানান, সড়ক বাতি ও সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবনকারীদের অভয়ারণ্যে পরিনত হয়েছে এ শহর। তবে সড়ক বাতি ও সিসিটিভি ক্যামেরা গুলো সচল হলে ছিনতাই ও মাদক ব্যবসা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ হবে বলে জানান তাঁরা।
উপরোক্ত বিষয়ে জামালপুর জেলা সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, জামালপুর পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডের বেশিরভাগ জায়গায় জ্বলছে না সড়কবাতি। রাতের আঁধারে রাস্তা দিয়ে সাধারণ মানুষের চলাচল দুষ্কর হয়ে পড়েছে। সেই সাথে ঘটছে চুরি-ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা। শহরের বিভিন্ন স্পটে ইয়াবা ও গাজা সেবনকারীরা অবাধে বিচরণ করছে। সিংহভাগ সিসি ক্যামেরা গুলো অচল। এগুলো সচল থাকলে হয়তো অপরাধ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকতো।
তিনি আরো বলেন, পৌরসভার ১২ নম্বার ওয়ার্ডে সড়ক বাতি না থাকায় বেড়েছে চুরি-ছিনতাই। সেই সাথে মাদক সেবীদের আড্ডা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। শুধু ১২ নম্বার ওয়ার্ডই নয় জামালপুর পৌরসভার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে বাতির ব্যবস্থা করতে হবে।
বিগত সরকারের আমলে ১২৬ টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছিলেন পৌর কর্তৃপক্ষ। তবে স্থাপনের তিন মাস পরেই এসব ক্যামেরা অচল হয়ে গেছে। অনতিবিলম্বেস সিসিটিভি ক্যামেরা সড়কের বাতিগুলো যদি সচল না করা হয় তাহলে এলাকাবাসীদের সাথে নিয়ে তিনি মানববন্ধন করবেন বলে জানান।
এ বিষয়ে জামালপুর পৌরসভার প্রশাসক মৌসুমী খানম জানান, যেখানে সড়ক বাতি নেই সেখানেই বাতি লাগানো হচ্ছে। কেউ যদি আমাদের কাছে অভিযোগ করে যে সড়ক বাতি নেই সে ক্ষেত্রে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছি। ১২৬টি সিসিটিভি ক্যামেরা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে সিসিটিভি ক্যামেরা সম্পর্কে কিছু বলতে পারছি না। এ বিষয়ে আমি অবগত নই। বিষয়টি জেনে তারপর জানাবো।
https://slotbet.online/