মঙ্গলবার সচিবালয়ে দর্শনার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ

Reporter Name / ৪১ Time View
Update : সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫


সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর চারটি ধারা বাতিলের দাবিকে কেন্দ্র করে চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে আগামী মঙ্গলবার (২৭ মে) বাংলাদেশ সচিবালয়ে সকল দর্শনার্থীর প্রবেশ সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব মুহাম্মদ আবদুল্যাহ আল জাবেদের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, “অনিবার্য কারণে আগামী ২৭ মে মঙ্গলবার সচিবালয়ে সকল ধরনের দর্শনার্থীর প্রবেশ বন্ধ থাকবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।”

উল্লেখ্য, সম্প্রতি গেজেট আকারে প্রকাশিত “সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ, ২০২৫” নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা বলছেন, নতুন এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে কর্মকর্তাদের বিভাগীয় মামলার পরিবর্তে শুধুমাত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুতির সুযোগ তৈরি করা হয়েছে, যা তারা ‘নিবর্তনমূলক’ ও ‘কালাকানুন’ হিসেবে দেখছেন।

সরকারি চাকরিজীবীদের অভিযোগ, অধ্যাদেশে যুক্ত চারটি ধারা চাকরি নিরাপত্তার পরিপন্থী। দাবি আদায়ে তারা গত কয়েকদিন ধরে সচিবালয়ের ভেতর ও আশপাশে বিক্ষোভ করছেন। মঙ্গলবারের মধ্যে দাবি না মানা হলে সারাদেশব্যাপী কর্মবিরতির হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।

এদিকে একই দিন সকাল সাড়ে ১১টায় সচিবালয়ের প্রধান ফটকের বিপরীত পাশে একটি গণসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে ‘জুলাই বিপ্লবী ছাত্র-জনতা’ নামে একটি সংগঠন। তারা সচিবালয়ের তথাকথিত “সংস্কারবিরোধী আমলাদের অপসারণ” এবং “ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারের” দাবি তুলেছে।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলমান আন্দোলনের বিরোধিতা করেছে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’। দলটির দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ সোমবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে লেখেন, “জনদুর্ভোগ ও ফ্যাসিবাদ দীর্ঘায়িত করার ক্যান্টনমেন্ট হিসেবে পরিচিত সচিবালয়ের ক্যু সম্পর্কে সচেতন থাকুন। পাঁচ আগস্ট পর্যন্ত কালো ব্যাজ ধারণ করে অফিস করা কর্মকর্তারা যদি ক্যু চালিয়ে যান, তবে তাদের পরিণতি হবে পতিত হাসিনার মতো।”

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদও একই দিনে এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, “সরকারের উচিত এসব দুর্নীতিগ্রস্ত আমলাদের অবিলম্বে অপসারণ করে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া।” তিনি আরও বলেন, “আজ যারা সচিবালয়, এনবিআর বা পোর্টে স্ট্রাইক করছেন, তাদের বলে রাখছি—চব্বিশ পরবর্তী বিপ্লব সেখানেও হবে। আপনারা আর লুটপাটের স্বাধীনতা পাবেন না।”

গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয় এবং এরপর গত রোববার তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। এরই প্রেক্ষিতে আন্দোলন আরও জোরদার হয়েছে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। মঙ্গলবার সচিবালয়ে দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধের সিদ্ধান্তকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে আন্দোলন কোন দিকে গড়ায়, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/