কষ্টি পাথর আসলেই কি এতো দামি?

Reporter Name / ৪৩ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২৭ মে, ২০২৫


বাংলার গ্রামে-গঞ্জে, শহরের অলিতে-গলিতে অনেকেই শুনেছেন এক রহস্যময় পাথরের নাম- কষ্টি পাথর। বলা হয়, এই পাথর অমূল্য। কেউ বলে, এতে লুকিয়ে আছে অলৌকিক শক্তি, আবার কেউ বলে, এটি শুধু স্বর্ণ পরীক্ষার জন্য। কিন্তু আসলেই কি কষ্টি পাথর এতটাই দামি?

কষ্টি পাথর, ইংরেজিতে যাকে বলে টার্চস্টোন। এটি একটি বিশেষ ধরনের খনিজ পাথর, যা সাধারণত কোয়ার্টজ, সিলিকন বা কার্বন-সমৃদ্ধ উপাদানে তৈরি। এটি অতীতকাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে স্বর্ণ ও রূপার বিশুদ্ধতা যাচাই করার কাজে।

খৃষ্টপূর্ব শতাব্দীতেও কষ্টি পাথরের ব্যবহার ছিল। প্রাচীন ভারত, চীন এবং মধ্যপ্রাচ্যে এই পাথরের মাধ্যমে স্বর্ণকাররা নির্ধারণ করতেন ধাতব বস্তু খাঁটি কি না।

আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায়ই দেখা যায় মানুষ দাবি করছে, তাদের কাছে নাকি কষ্টি পাথরের টুকরা আছে যার মূল্য কোটি টাকা! কিছু ভিডিওতে পাথরের উপর আগুন ধরানো, পানি ফেলা বা চুম্বক লাগানোর মতো পরীক্ষা দেখানো হয়। এসব দেখিয়ে দাবি করা হয় এটি “আসল কষ্টি পাথর”।

আর এ নিয়ে নানা প্রতারনার গল্পও রয়েছে। অনেকেই দাম দিয়ে এই কষ্টি পাথর কিনে প্রতারিত হয়েছেন। বাংলাদেশের পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, কষ্টি পাথর সংক্রান্ত প্রতারণার মামলার সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে।

জেমোলজিস্টরা বলছেন, কষ্টি পাথর নিজে খুবই সাধারণ একধরনের খনিজ। এর দাম কয়েকশো টাকা থেকে হাজার খানেক পর্যন্ত হতে পারে, যা নির্ভর করে এর গঠন ও মানের উপর। তবে এর ভেতর কোনও অলৌকিক শক্তি নেই।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বলছেন, অনেকেই কালো রঙের পাথরে নির্মিত বস্তু দেখলেই কষ্টি পাথরে তৈরি বস্তু নামে অভিহিত করে। কষ্টিপাথর আসলে খুব বেশি দামি তা নয়। এসব পাথর নানা রঙের হয়। এসব রঙের মধ্যে কালো রঙ বেশ দুষ্প্রাপ্য। তাই কালো পাথরের চাহিদা বেশি, তাই দামও কিছুটা বেশি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাঝে মাঝে বিভিন্ন সংবাদে, কোটি টাকার কষ্টিপাথরের মূর্তি উদ্ধারের যে তথ্য প্রচার করা হয় তা অনেকাংশে সত্য নয়। প্রতারক চক্রগুলো এভাবেই অনেকের সাথে প্রতারণা করে থাকেন।

আগ্নেয়গিরির লাভা শীতল হয়ে অতি কঠিন শিলায় পরিণত হয়। তা বিভিন্ন রঙে ও মিশ্রিত রঙে পাওয়া যায়। কষ্টিপাথর বা নিকষপাথর সোনাসহ কিছু ধাতু যাচাইয়ের কাজে ব্যবহৃত হয়।

এ পাথর আসল সোনা, রূপা, প্লাটিনাম সনাক্ত করতে ব্যবহার করা হয়। পাথরের গায়ে সোনা ঘষে তার উপর এসিডের প্রলেপ দিয়ে সেটি কত ভরি সোনা তা নির্ধারণ করা যায়। পাথর যত কালো হবে ততই সোনার ঔজ্জ্বল্য বোঝা যাবে। তাই কালো কষ্টিপাথরের চাহিদা বেশি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/