বগালেক হঠাৎ খোলায় বিপাকে পর্যটক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

Reporter Name / ৭৫ Time View
Update : মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০২৫


প্রায় তিন বছর পর পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ বান্দরবানের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র বগালেক খুলে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও পর্যটকরা। পর্যাপ্ত প্রস্তুতির অভাবে পর্যটনসেবায় দেখা দিয়েছে নানা ধরনের সমস্যা।

গত ৬ জুন থেকে বগালেকের ওপর জারি থাকা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়, যা ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শুরু হলে জারি করা হয়েছিল। প্রায় ৩৩ মাস পর কেন্দ্রটি আবার খুলে দেওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে যেমন আশাবাদ জেগেছে, তেমনি দেখা দিয়েছে নানা বাস্তব সংকট।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, তারা আগাম কোনো প্রস্তুতি নিতে পারেননি, কারণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের তথ্য একদিন আগে জানানো হয়েছে। ফলে আবাসন, খাবার, স্যানিটেশন ও বিদ্যুৎ সংক্রান্ত সেবা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে কটেজগুলো জরাজীর্ণ হয়ে গেছে, কাপড়চোপড় নষ্ট হয়েছে, খাবার মজুদ নেই, এমনকি সোলার ব্যাটারিও অকেজো হয়ে গেছে।

স্থানীয় কটেজ মালিক লালটন পোইময় বম বলেন, “আমার দুটি কটেজে একসঙ্গে ২২ জন পর্যটক থাকার ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু এতদিন বন্ধ থাকার কারণে কটেজের অবস্থা বেহাল। আগাম কিছু জানালে অন্তত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মজুদ কাজটা শুরু করতে পারতাম।”

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, হঠাৎ খোলার খবরে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে বগালেকে। কিন্তু পর্যাপ্ত আবাসন ও খাবারের সুবিধা না থাকায় অনেকেই ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

ঢাকা থেকে আসা এক বাইক রাইড দলের সদস্য হাফিজুর রহমান বলেন, “বগালেকে ঘুরতে পেরে ভালো লাগছে, কিন্তু থাকার ব্যবস্থা নেই বললেই চলে।” প্রথমবারের মতো বান্দরবান ভ্রমণে আসা মো. হিমু রায়হান বলেন, “ঘুরতে এসে খাওয়াদাওয়ার সমস্যায় পড়েছি, প্রস্তুতি থাকলে এই সমস্যা হতো না।”

বগালেক হঠাৎ খোলায় বিপাকে পর্যটক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা
বগালেক হঠাৎ খোলায় বিপাকে পর্যটক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

রুমা উপজেলা পর্যটক গাইড সমিতির সহসভাপতি মো. বেলাল উদ্দিন বলেন, “নিষেধাজ্ঞার সময় আমাদের ৭৫ জন গাইড কাজ হারিয়েছিলেন। এখন যদি পর্যটন চালু রাখা হয়, তাহলে আমাদের আয়ের পথ খুলে যাবে।”

জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বিবেচনায় অল্প সময়ের মধ্যে বগালেক ও তমাতুঙ্গী পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়রা কিছু সমস্যায় পড়লেও ধীরে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিক হবে। ইতোমধ্যে ইউএনওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন স্থানীয়রা পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রাখেন। ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করে পর্যটকদের সেবা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, “পজিটিভ চিন্তাভাবনার মাধ্যমে সবাই একসঙ্গে কাজ করলে পর্যটনের মাধ্যমে স্থানীয়দের আয়রোজগার বাড়বে এবং আবারও কর্মচাঞ্চল্য ফিরে আসবে।”

এখন প্রয়োজন দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও গাইডদের সহযোগিতা করে বগালেককে পর্যটকদের জন্য উপযোগী করে তোলা। এতে যেমন পর্যটকরা ভালো অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরবেন, তেমনি স্থানীয়রাও ফিরে পাবেন তাদের হারানো জীবিকা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/