কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা কামাল হোসেন দূর্জয় ওরফে কামাল মেম্বারের জানাজা বুধবার (৯ জুলাই) আছরের নামাজের পর তার নিজ গ্রাম মনখালীনিজে অনুষ্ঠিত হয়। হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে জানাজাটি শুধুমাত্র বিদায় অনুষ্ঠান হয়ে থাকেনি—পরিণত হয়েছে একটি গণবিচারের দাবিতে উত্তাল মিছিলে।
নিহতের পরিবার-পরিজন, সহকর্মী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ হাজারো সাধারণ মানুষ জানাজায় অংশ নেন। শোকবিহ্বল জনতা ক্ষোভে ফেটে পড়ে, “এই মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না”—এই স্লোগানে আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়ে ওঠে। জানাজার প্রাঙ্গণেই তা রূপ নেয় সময়ের দাবিতে উত্তাল গণসমাবেশে।
জানাজার পূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনায় জেলার শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী বলেন,
“জালিয়াপালংয়ে একের পর এক পরিকল্পিত খুনে মানুষ আতঙ্কিত। কামাল মেম্বারের হত্যার বিচার কক্সবাজারবাসীর প্রধান দাবি।”
জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা নুর আহমদ আনোয়ারি বলেন, “এমন একজন জনপ্রিয় ও জনদরদি নেতাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা পুরো সমাজের জন্য হুমকি।”
উখিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সরওয়ার জাহান চৌধুরী বলেন, “আমি তার সন্তানদের পড়াশোনার দায়িত্ব নিচ্ছি। বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকবো।”
জামায়াত নেতা মাওলানা আবুল ফজল জানিয়ে দেন, “এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হলে ভবিষ্যতে কেউ এমন সাহস দেখাতে পারবে না। রাষ্ট্রকে এর জবাব দিতেই হবে।”
রহস্যঘেরা মৃত্যু, এখনও অন্ধকারে তদন্ত
সোমবার (৭ জুলাই) রাত ১১টার পর নিখোঁজ হন কামাল মেম্বার। পরদিন (৮ জুলাই) দুপুরে মনখালী পাহাড়ি ছরায় তার মরদেহ পাওয়া যায়। স্থানীয়দের দাবি, এটি পূর্বপরিকল্পিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তদন্ত চলছে। তবে এখনও কোনো মামলা হয়নি কিংবা কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়নি।
গত ১৫ দিনে উখিয়ায় সংঘটিত তিনটি হত্যাকাণ্ড—নুরুল আমিন ডাকাতির ঘটনায় নিহত, শিশু কানিজ ফাতেমা জ্যোতি পিতার হাতে খুন, এবং সর্বশেষ ইউপি সদস্য কামাল মেম্বারের হত্যাকাণ্ড—সার্বিকভাবে পুরো অঞ্চলে নিরাপত্তাহীনতা ও ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।
সাধারণ জনগণ দাবি করেই বলেছেন, “এই হত্যারও যদি বিচার না হয়, তবে কি বিচারহীনতার সংস্কৃতি স্থায়ী হবে?” উত্তরের অপেক্ষায় আছে কক্সবাজারবাসী, চোখে জল, কণ্ঠে প্রতিশোধের আগুন।
https://slotbet.online/