জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, উচ্চকক্ষ গঠন হবে জাতীয় নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে, আসন সংখ্যার ভিত্তিতে নয়। তার মতে, ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা এবং জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য উচ্চকক্ষ একটি অপরিহার্য কাঠামো, কিন্তু এ বিষয়ে এখনও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পূর্ণ ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
সোমবার (২৮ জুলাই) সকালে জামালপুরে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন নাহিদ।
তিনি বলেন, “জুলাই সনদে মৌলিক সংস্কারের যে রূপরেখা আমরা দিচ্ছি, তার ভেতরে অধিকাংশ বিষয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতৈক্য হয়েছে। বিএনপিসহ বেশ কিছু দলের পক্ষ থেকেও উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব এসেছে। কিন্তু আমরা বলেছি, এই উচ্চকক্ষ হতে হবে ভোটের অনুপাতে, যেন জনমতের প্রকৃত প্রতিফলন ঘটে। আসনের সংখ্যাকে ভিত্তি করলে সেটি সুষ্ঠু ও ভারসাম্যপূর্ণ প্রতিনিধিত্ব দেবে না। এখনো এ বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি, তবে আলোচনা চলছে।”
নাহিদ ইসলাম আশা প্রকাশ করেন, “আগামী ৫ আগস্টের মধ্যে একটি সমন্বিত ‘জুলাই সনদ’ তৈরি হোক এবং সর্বদলীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে তা ঘোষণা করা সম্ভব হোক। এ সনদ ঘোষণার পরই নির্বাচন সংক্রান্ত তোড়জোড় শুরু হবে। তবে তার আগে একটি নিরপেক্ষ ও সমতাভিত্তিক নির্বাচনি পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “প্রশাসনের অনেক অঙ্গ, বিশেষত পুলিশ, এখনও নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে না। সরকারি সুবিধা ও ক্ষমতা অনেক ক্ষেত্রে একতরফাভাবে ব্যবহার হচ্ছে, যা নির্বাচনের জন্য সহায়ক নয়।”
এর আগে সকালে শহরের জেলা পরিষদ ডাকবাংলোতে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া ১১টি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এনসিপি নেতারা। সেখানে শহীদ পরিবারের সদস্যরা তাদের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরলে, দলটির পক্ষ থেকে তা সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়। পরে নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল চামড়াগুদাম এলাকার আল-জামিয়াতুল হাবীবিয়াহ কওমি মাদ্রাসা এবং হরিজন পল্লী পরিদর্শনে যায়।
উল্লেখ্য, ১৯ জুলাইয়ের ঘটনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিশেষজ্ঞ ও নাগরিক সংগঠনের মধ্যে দেশীয় শাসনব্যবস্থা সংস্কার নিয়ে আলোচনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। এনসিপি শুরু থেকেই একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উচ্চকক্ষ, শক্তিশালী বিকেন্দ্রীকরণ এবং নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে জুলাই সনদ একটি সম্ভাব্য ঐকমত্যের নথি হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
https://slotbet.online/