নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল মির্জারচর ইউনিয়নের মেঘনা নদীতে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চালাচ্ছে একটি চক্র।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের গণস্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ বাংলা অ্যাফেয়ার্সের রায়পুরার নিজস্ব প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২০ জুলাই অনলাইনে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। কিন্তু এরপরও প্রশাসনের কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায়নি। বরং বালু উত্তোলনের মাত্রা আরও বেড়েছে।
অন্যদিকে, সংবাদ প্রকাশের জেরে স্থানীয় সাংবাদিক শফিকুল ইসলামকে বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি তিনি রায়পুরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরির (জিডি) মাধ্যমে অবগত করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রায়পুরা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদুর রহমান রুবেল বলেন, “এই উপজেলায় কোনো বালুমহল ইজারার অনুমতিপত্র নেই। যারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।” তিনি আরও বলেন, “স্থানীয় এলাকাবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এসব বালুখেকোদের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”
মির্জারচর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা (র্যাবের সাবেক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর) মিজানুর রহমান বলেন, “‘ বাংলা অ্যাফেয়ার্সে প্রকাশিত ‘রায়পুরায় নদীতে অস্ত্রবাজি, বালু দস্যুদের তাণ্ডব’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন এখনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি, যা অত্যন্ত হতাশাজনক।”
এর আগে গত ৫ জুলাই মির্জারচর ইউনিয়নবাসী অবৈধ বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেন। সেই মানববন্ধনে সন্ত্রাসী বালুখেকোরা অবৈধ অস্ত্র দেখিয়ে গুলিবর্ষণ ও হামলা চালায়।
সাম্প্রতিক সময়েও পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে বালুখেকোদের সঙ্গে দেখা গেছে। তাদের ভয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা মুখ খুলতে সাহস পান না। যারা প্রতিবাদ করে, তাদেরই হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন বলেন, “আমি প্রতিবাদ করায় সন্ত্রাসীরা আমার ও আমার পরিবারের ওপর শারীরিক হামলা চালিয়েছে। এরপরও আমি প্রতিবাদে অটুট আছি এবং থাকব। ইউনিয়নবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাই এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ চাই।”
রায়পুরা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান (খোকন) জানান, “আমি ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ইস্যুতে পোস্ট করে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। সাংবাদিক শফিকুল ইসলামের ওপর প্রাণনাশের হুমকির তীব্র নিন্দা জানাই।”
এদিকে, সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় রায়পুরা প্রেসক্লাব ও নরসিংদী প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সাংবাদিককে হুমকিদাতাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে তারা।
https://slotbet.online/