[ad_1]
বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে পাচার হওয়া সম্পদ ফেরত আনা এখন সরকারের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে শুক্রবার রাতে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
ড. ইউনূস বলেন, গত ১৫ বছরে দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। সরকার সে অর্থ ফেরত আনতে অব্যাহত প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তবে বিভিন্ন দেশের আইনি জটিলতা এবং প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবন্ধকতা বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি পরিষ্কারভাবে জানান, সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর দৃঢ় সদিচ্ছা ছাড়া এই সম্পদ ফেরত আনা সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক আর্থিক কাঠামো উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে অর্থ পাচার ঠেকাতে ব্যর্থ হচ্ছে। বরং কিছু আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও নীতি অনেক ক্ষেত্রে ট্যাক্স হেভেনগুলোতে অবৈধ অর্থ স্থানান্তরে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করছে। তিনি সংশ্লিষ্ট দেশ ও প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশে আহ্বান জানান, পাচারকৃত অর্থ গচ্ছিত না রেখে সেটি যেন প্রকৃত মালিক—অর্থাৎ কৃষক, শ্রমজীবী ও সাধারণ করদাতাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
জাতিসংঘ সনদের আট দশক পূর্তি উপলক্ষে ড. ইউনূস সংস্থাটিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এই সময়ের মধ্যে জাতিসংঘ শান্তি, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার ও বৈষম্য হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তার মতে, জাতিসংঘের কারণেই বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ১৩ কোটি অসহায় মানুষ খাদ্য ও মৌলিক সহায়তা পাচ্ছে, আর কোটি কোটি শিশু টিকার আওতায় আসছে।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর জাতিসংঘে তিনি গণঅভ্যুত্থানোত্তর বাংলাদেশের পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরেছিলেন। এবার তিনি জানাচ্ছেন, সেই রূপান্তরের যাত্রায় কতটা অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে। তার ভাষায়, “বাংলাদেশের গল্প কেবল একটি দেশের ইতিহাস নয়, এটি দেখিয়ে দেয় সাধারণ মানুষও গভীর সংকট কাটিয়ে উঠতে পারে। এটি বিশ্বকে আশ্বস্ত করে যে, সমাধান সবসময়ই সম্ভব।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য ছিল ক্ষমতার ভারসাম্যপূর্ণ একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা, যেখানে কোনো স্বৈরশাসক আর ফিরে আসতে না পারে এবং জনগণের রক্ষকরা যেন জনগণের ক্ষতির কারণ না হয়।
তিনি জানান, বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থা, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, দুর্নীতিবিরোধী উদ্যোগ, নারী অধিকারসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে সংস্কারের জন্য ১১টি স্বাধীন কমিশন গঠন করা হয়েছে। এসব কমিশন জনমত যাচাই ও গবেষণার ভিত্তিতে বিস্তারিত সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই সঙ্গে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সরকার নাগরিকবান্ধব সংস্কার অব্যাহত রাখবে।
[ad_2]
https://slotbet.online/